আজকের এই পোস্ট এ আমি কিছু ভালো এবং জনপ্রিয় বিদায়ী কবিতা লিখেছি যেগুলো আপনারা আপনাদের “স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠানের কবিতা” অথবা “বিদায় অনুষ্ঠানের কবিতা আবৃত্তি” হিসেবে বলতে পারবেন।
Table of Contents
১। বিদায়-বেলায়
স্মৃতি
সময় চলে যায়
আর কথা রয়ে যায়
হৃদপিন্ডের পাতায় পাতায়
দিন-রাত্রির স্বপ্ন মেলায়।।
ভুলে যেতে চাইলেও
ভুলা যায় না এমন কিছু স্মৃতি
আপন হৃদপিন্ডের আয়নায় যেন
অন্ধ রীতি।।
সুরের পাখি যেমন দূরে গেলেও
তার রেশ ফুরায় না,
তেমনি আবদুস সাত্তার ভাই এর বিদায় বেলার স্মৃতি
ভুলে যেতে চাইলেও
তারে ভোলা যায় না।।
বিদায় অনুষ্ঠানের বিদায়ী কবিতা
২। কাজী নজরুল ইসলাম
ছায়ানট
তুমি অমন ক’রে গো বারে বারে জল-ছল-ছল চোখে চেয়ো না,
জল-ছল-ছল চোখে চেয়ো না।
ঐ কাতর কন্ঠে থেকে থেকে শুধু বিদায়ের গান গেয়ো না,
শুধু বিদায়ের গান গেয়ো না।।
হাসি দিয়ে যদি লুকালে তোমার সারা জীবনের বেদনা,
আজো তবে শুধু হেসে যাও, আজ বিদায়ের দিনে কেঁদো না।
ঐ ব্যথাতুর আঁখি কাঁদো-কাঁদো মুখ
দেখি আর শুধু হেসে যাও,আজ বিদায়ের দিনে কেঁদো না।
চলার তোমার বাকী পথটুকু-
পথিক! ওগো সুদূর পথের পথিক-
হায়, অমন ক’রে ও অকর”ণ গীতে আঁখির সলিলে ছেয়ো না,
ওগো আঁখির সলিলে ছেয়ো না।।
দূরের পথিক! তুমি ভাব বুঝি
তব ব্যথা কেউ বোঝে না,
তোমার ব্যথার তুমিই দরদী একাকী,
পথে ফেরে যারা পথ-হারা,
কোন গৃহবাসী তারে খোঁজে না,
বুকে ক্ষত হ’য়ে জাগে আজো সেই ব্যথা-লেখা কি?
দূর বাউলের গানে ব্যথা হানে বুঝি শুধু ধূ-ধূ মাঠে পথিকে?
এ যে মিছে অভিমান পরবাসী! দেখে ঘর-বাসীদের ক্ষতিকে!
তবে জান কি তোমার বিদায়- কথায়
কত বুক-ভাঙা গোপন ব্যথায়
আজ কতগুলি প্রাণ কাঁদিছে কোথায়-
পথিক! ওগো অভিমানী দূর পথিক!
কেহ ভালোবাসিল না ভেবে যেন আজো
মিছে ব্যথা পেয়ে যেয়ো না,
ওগো যাবে যাও, তুমি বুকে ব্যথা নিয়ে যেয়ো না।।
৩। বিদায়ী বাসনা
– মহিব্বুল্লাহ আফনান
বিদায় বেলার ক্রান্তিলগ্নে ভাড়াক্রান্ত মনে,
কোন ভাষাতে জানাব বিদায় ভাবছি ক্ষণে ক্ষণে।
তোমার থেকেই গ্রহেছি মোরা জ্ঞানের পাণ্ডুলিপি,
সেই তোমাকে কেমনে জানাই ‘বিদায়’ তদ্যপি।
তবুও আজি ‘বিদায়’ মঞ্চে দাঁড়াতে হলো মোরে,
স্নেহ দিও, দোয়া দিও বিদায় কালের তরে।
বিদায় কালে করো গ্রহণ আপন ভালোবাসা,
তোমার বুকেই পেয়েছি মোরা জীবন গড়ার আশা।
শিক্ষাগুরুর কদমতলে জানাই শ্রদ্ধা জ্ঞাপন,
যাদের দিশায় লাভ করেছি বিদ্যার আয়োজন।
বিদ্যাগুরু করো মোদের ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা,
জীবন মোদের ধন্য হবে, শ্রাদ্ধ হবে জমা।
শেষের কালে সবার নিকট দোয়া ভিক্ষা মাগি,
জীবন পথে চলতে গিয়ে সফল হওয়ার লাগি।
৪/ তুমি কি বিদায় নিলে
নাকি বাহানা খুঁজছিলে?
আমি খুবই বোকা ছিলাম
শুধু ভালোবাসতে চেয়েছিলাম।
৫/ মন চায় না দিতে বিদায়
কিন্তু আমরা সত্যিই বড় নিরুপায়
সময় চলে যাচ্ছে সময়ের মত
মনে করে দেখো স্মৃতি আছে কত!
৬/ আজ আকাশেরও মন ভাল নেই
সাদা মেঘ গুলো কালো হয়ে উঠেছে
আজ তবে থাক, পরে ভালোবেসো
বিদায় মেঘ, কাল আবার এসো।
৭/ আসলেই কি বিদায় নেওয়া যায়?
তুমিও কি আজ ভুলে গেছো আমায়?
কই আমি তো ভুলতে পারি না,
শতবার ফিরে আসে অতীতের ভাবনা৷
স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠানের কবিতা
১/ দেহকে জানাই চির বিদায়
অনেকেই তো ছিল এ যাত্রায়
আমি এখন বাতাসে ভাসব নির্দ্বিধায়।
২/ ভাঙ্গে, ভাঙ্গে, সবই ভাঙ্গে
বদলে যায় দিন, মাস, বছর
কেলেন্ডারের তারিখ পাল্টায়।
পাল্টে যায় মানুষ, মানুষের মনের সমীকরণ।
এভাবেই বিদায় নেয় আরো একটি বছর৷
৩/ খুবই বিষন্ন এক বিকেলে আমি বিদায় নিবো
হঠাৎ শালিকের সাথে দেখা হলে গান শোনাবো,
কেউ দেখুক বা না দেখুক, আমি চলে যাবো
আড়াল থেকে তোমার শুধু ভালবাসবো।
৪/ আমাদের দেখা হয়েছিল রঙিন ধুলো কুড়োতে গিয়ে
অনেক বেলা কেটেছে পুতুল খেলে
জীবনের ছুটি ফুরিয়ে যাবার পরে
বিদায় নিতে আমার কাছে এলে!
৫/ একবার ভেবেছিলাম তোমাকে ছেড়ে যাব
‘ বিদায় প্রিয় ‘ বলে পথ হারাবো
তখনই তোমার মিষ্টি ঠোঁটের ওঠা নামার কথা মনে পড়ে
তাই বারবার ফিরে আসি তোমার বাহুডোরে।