Table of Contents
পরিবাহী, অর্ধ পরিবাহী এবং অপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে?
পরিবাহী, অর্ধপরিবাহী এবং অপরিবাহী পদার্থ হলো পদার্থের তিনটি ভিন্ন ধরণের শ্রেণিবিন্যাস, যা তাদের তাপ বা বিদ্যুৎ পরিবহন ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে করা হয়।
পরিবাহী পদার্থ (Conductor):
যে পদার্থ তাপ বা বিদ্যুৎ সহজে পরিবাহিত করতে পারে, তাকে পরিবাহী পদার্থ বলে। এসব পদার্থে মুক্ত ইলেকট্রনের উপস্থিতি বেশি থাকে, যা তাপ এবং বিদ্যুৎ পরিবহন সহজ করে।
বৈশিষ্ট্য:
- ইলেকট্রনের প্রবাহ সহজ হয়।
- তাপ এবং বিদ্যুৎ উভয়ই ভালোভাবে পরিবাহিত হয়।
- সাধারণত ধাতু এই শ্রেণিতে পড়ে।
উদাহরণ:
- তামা, রূপা, সোনা, অ্যালুমিনিয়াম, লোহা, পারদ।
ব্যবহার:
- বৈদ্যুতিক তার, রান্নার পাত্র, এবং যন্ত্রাংশে।
অর্ধপরিবাহী পদার্থ (Semiconductor):
যে পদার্থের বিদ্যুৎ পরিবহন ক্ষমতা পরিবাহী এবং অপরিবাহী উভয়ের মধ্যবর্তী অবস্থায় থাকে, তাকে অর্ধপরিবাহী পদার্থ বলে। এসব পদার্থের পরিবাহিতা তাপমাত্রা বা বাহ্যিক প্রভাবের ওপর নির্ভর করে।
বৈশিষ্ট্য:
- নিম্ন তাপমাত্রায় অপরিবাহী এবং উচ্চ তাপমাত্রায় পরিবাহী হিসেবে কাজ করে।
- পরিবাহিতা উন্নত করার জন্য ডোপিং প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয়।
- এর পরিবাহীতা বাইরের শক্তি (উত্তাপ, আলো বা বৈদ্যুতিক প্রভাব) দ্বারা বাড়ানো যায়।
উদাহরণ:
- সিলিকন, জার্মেনিয়াম।
ব্যবহার:
- ট্রানজিস্টর, ডায়োড, সৌরকোষ, এবং মাইক্রোচিপ তৈরিতে।
অপরিবাহী পদার্থ (Insulator):
যে পদার্থ তাপ বা বিদ্যুৎ পরিবহনে অক্ষম বা অত্যন্ত কম সক্ষম, তাকে অপরিবাহী পদার্থ বলে। এতে মুক্ত ইলেকট্রনের সংখ্যা অত্যন্ত কম বা নেই।
বৈশিষ্ট্য:
- বিদ্যুৎ প্রবাহের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
- তাপ পরিবাহিতা খুবই কম।
- সাধারণত অকাঠামোগত বা অজৈব পদার্থ।
উদাহরণ:
- কাঠ, রবার, কাচ, প্লাস্টিক।
ব্যবহার:
- বৈদ্যুতিক তারের আবরণ, তাপ নিরোধক, এবং বৈদ্যুতিক সুরক্ষায়।
মূল পার্থক্য:
বৈশিষ্ট্য | পরিবাহী | অর্ধপরিবাহী | অপরিবাহী |
---|---|---|---|
পরিবাহিতা | খুব বেশি | মাঝারি | খুব কম বা নেই |
মুক্ত ইলেকট্রন | প্রচুর | কিছু | প্রায় নেই |
তাপ ও বিদ্যুৎ | সহজে পরিবাহিত হয় | নির্দিষ্ট অবস্থায় পরিবাহিত হয় | পরিবাহিত হয় না |
উদাহরণ | তামা, রূপা | সিলিকন, জার্মেনিয়াম | কাঠ, প্লাস্টিক, কাচ |
এই তিন ধরনের পদার্থের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য তাদের প্রযুক্তিগত ও দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়েছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করি যেন আপনারা সঠিক তথ্যটি খুজে পান। যদি আপনাদের এই “পরিবাহী, অপরিবাহী এবং অর্ধ পরিবাহী পদার্থ কাকে বলে?” আর্টিকেল পছন্দ হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ৫ স্টার রেটিং দিবেন আর উক্ত লেখায় কোন ভুল থেকে থাকে তাহলে আমাদের অবশ্যই অবগত করবেন।